বাংলাদেশীরা যে পাঁচ কারণে প্রাণী হত্যার ব্যাপারে অতি উৎসাহী

বাংলাদেশীরা যে পাঁচ কারণে প্রাণী হত্যার ব্যাপারে অতি উৎসাহী

Spread the love

বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রাণী হত্যার বিষয়টি খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। কয়েকদিন পর পরই সোশ্যাল মিডিয়াতে বা দৈনিক পত্রিকা সমূহতে কোন না কোন প্রাণী হত্যার খবর পাই। যাদের হত্যার খবর পাই এদের বেশিরভাগই স্তন্যপায়ী গোত্রীয়। স্তন্যপায়ী মানে ইঁদুর গোত্রীয় তা কিন্ত নয়। একেবারে লুক্রেটিভ ইলিউসিভ অধরা প্রাণী। যাদের বেশিরভাগই  IUCN এর রেডলিস্টে আছে। আমার কাছে মনে হল বাংলাদেশের মানুষেরা কেন এত প্রাণী হত্যা করাতে সিদ্ধহস্ত। বা প্রাণী বাচানোর থেকে হত্যা করার ব্যাপারে তারা এত আগ্রহী কেন এটা নিয়ে আমার কিছু কারণ খুঁজতে মন চাইল। আমি যে কারণগুলো বের করেছি তা এক এক করে নিচে তুলে ধরছি।

 

১. বন্য প্রাণী উপকার করেঃ

বন্য প্রাণী বাংলাদেশের মানুষের উপকার করে এটাও এক সমস্যা। বিশেষ করে যখন কবিরাজ এই কথা বলে প্রচার করে যে ডলফিনের তেলে আছে রোগ নিরাময় হওয়ার কারণ বা শিয়ালের মাংস খেলে বৃদ্ধি পায় যৌনশক্তি , অথবা তক্ষক খেলে দূর হয় বন্ধ্যাত্ব । তখন তো বলতেই হবে এই বন্য প্রাণীরা উপকার পৌছাচ্ছে। আর এই উপকার পেতে হলে হত্যা করা ছাড়া আর তো কোন উপায় নেই। আবার অনেক বন্যপ্রাণীর চামড়া বিক্রি করে উচ্চ মূল্য পাওয়া যায় সেটাও তো এক রকম উপকারই বটে। তাই চামড়া ছিলতে হলেও তো হত্যা করা জরুরি।

২. বন্য প্রাণী ক্ষতি করেঃ

বাঘ সে তো সরাসরি মানুষ খায়। বাঘের ছোট ভাই মেছো বাঘ খায় মাছ। বন বিড়াল খায় কবুতর। শিয়াল খায় মুরগি। গুই সাপ খায় ডিম। কাঠবিড়ালি খায় আম আর কাঠাল। বানরেরা করে ডিস্টার্ব।  এছাড়াও অনেক প্রাণী আছে যারা উপকার করলেও গ্রামবাসীর কাছে তারা বরাবর ক্ষতিই করে আসছে যেমনঃ দাড়াশ সাপ। এই সাপ নাকি আবার বাংলাদেশের মানুষ যে গরু পালে সেই গরুর দুধ খেতে খুব পছন্দ করে। এছাড়া আরো যত রকমের প্রাণী আছে তাদের প্রায় সকলেই বাংলাদেশের মানুষকে সরাসরি ক্ষতি পৌছায় তাই এরা প্রাণী দেখলেই পিটিয়ে মারতে হাত নিশপিশ করে।

৩. বন্য প্রাণী যা উপকার ক্ষতির একটাও করে নাঃ

উপকার করে না আবার সরাসরি ক্ষতিও করে না তো এদের বাচিয়ে রেখে লাভটাই বা কি। এরা অহেতুক জিনিস। তাই এদের কে পিটিয়ে মারতে হবে বা এদের কে ধরে নিয়ে বাজারে গিয়ে যারা তা খায় তাদের কাছে বেচতে হবে। যেমনঃ ব্যাঙ্গ ,কচ্ছপ। এরা বাংলাদেশীদের কাছে এক অহেতুক এবং অনর্থক প্রাণী। তাই এদের সুবিধা অসুবিধা কোনটারই পরওয়া না করে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে এদের আবাসস্থল।

৪. বন্য প্রাণী যা মজা করে খাওয়া যায়ঃ

কিছু বন্য প্রাণী আছে যাদের আবার মজা করে খাওয়া যায়। যেমনঃ যত রকম পাখি আছে। এই পাখিদের শেষটাও যদি চলে আসে আমাদের কারো কাছে তাহলেও এর রক্ষা নেই। কেননা, খাবার জিনিস বাদ যাবে কেন। এদের স্ট্রং বিশ্বাস যে খাওয়ার কারণে কোন প্রাণী বিলুপ্ত হয় না। পরিযায়ী , ঘরোয়া কোন পাখিই বাদ যায় না। সুযোগ হলেই গপাগপ পেটে যাওয়া চাই।

৫. বন্য প্রাণীকে শাস্তি দিয়ে মজা পাওয়া যায়ঃ

এদেশের অনেকে আবার বন্য প্রাণীকে শাস্তি দিয়ে মজা পায়। মজা পাওয়াটা যেহেতু বিনোদনের অংশ তাই বন্য প্রাণী কে শাস্তি দেওয়াটা তাদের নিকট বিনোদনের অংশ হিসেবে সাব্যস্ত হয়। বন্য প্রাণী পিটিয়ে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দিয়ে ছবি খেচলে অনেকের বাহবা পাওয়া যায়। তাই বন্য প্রাণীকে হত্যা করাটা যখন ক্রেডিট হিসেবে সাব্যস্ত হয় তখন হত্যা না করেই বা উপায় কি।

মূলত এ কারণসমূহের জন্যই বাংলাদেশে বন্য প্রাণীদের হত্যা করা হয়। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে এ কারণ সমূহের মধ্যে সব কারণগুলোই কোন না কোন বন্যপ্রাণীর সাথে মিলে যায় সুতরাং বাংলাদেশ এক মাত্র  মানুষের জন্য বসবাসের জন্য আদর্শ। অবশ্য যে মানুষেরা এই বন্য প্রাণীদের মেরে পিটিয়ে বিলুপ্তির সম্মখীন করাবে তারা কি আদৌ মানুষ হিসেবে সাব্যস্ত হবে নাকি কোন দোপেয়ে জানায়োর হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

 

One thought on “বাংলাদেশীরা যে পাঁচ কারণে প্রাণী হত্যার ব্যাপারে অতি উৎসাহী

  1. সাব্বির

    প্রানী হত্য করা আসলেই অনেক পাপ। তবে উপরোক্ত কারনে মানুষ প্রানী হত্যা করে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.