ভারতে সাপের কামড়ে এত বেশি মানুষ মারা যাওয়ার কারণ কি?

ভারতে সাপের কামড়ে এত বেশি মানুষ মারা যাওয়ার কারণ কি?

Spread the love

বিশ্বে যে কয়েকটা দেশ সাপের কামড়ে সবথেকে বেশ ভুক্তভোগী তারমধ্যে ভারত অন্যতম। ভারতে সাপের সাথে মানুষের নিত্যদিনের সংঘর্ষের কথা কারো অজানা বিষয় নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর দেওয়া তথ্যানুসারে ভারতে প্রতিবছর প্রায় আটাশ লাখ মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় । এরমধ্যে মারা যায় ৪৬,৯০০ জন [১]। সাপের কামড়ে মোট মৃত্যুর প্রায় অর্ধেকেই ঘটে ভারতে। অর্থাৎ মানুষ এবং বন্য প্রাণীর সাথে ভারতে সবথেকে বেশি সংঘর্ষ হয়ে থাকে যার কারণে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ ঝড়ে যায়। ২০১১ সালের এক ডেটা অনুযায়ী ভারতে সাপের কামড়ে মৃত মানুষের সংখ্যা ছিল ৪৫,৯০০ [২]। অর্থাৎ এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান সামনে রাখলে বুঝা যায় সাপের কামড়ে নিহতের সংখ্যা ভারতে কমতির দিকে নয় বরং তা সবসময় পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি থাকছে। অর্থাৎ এটা এক বড় এক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। ভারত সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন এ জন্য বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপ নিলেও তা এই সংখ্যাকে কমাতে পারছে না। আমরা আশা করি এই প্রবন্ধে সেই কারণ সমূহ  খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।

গার্ডিয়ান পত্রিকার এক প্রতিবেদনে সঠিক শিক্ষা এবং সচেতনতার অভাব কে চিহ্নিত করা হয় অন্যতম কারণ হিসেবে। ভারতে সাধারণ হিন্দুদের অনেকে সাপকে সুপার ন্যাচারাল প্রাণী হিসেবে চিন্তা করে। বিভিন্ন সম্প্রদায় সাপকে পুজো করে। এরকম অন্ধ বিশ্বাস মেডিকেল ট্রিটমেন্ট থেকে মানুষকে দূরে সড়িয়ে সাধারণ ওঝা যোগীদের উপর এ ব্যাপারে বিশ্বাস কে মজবুত করে। রাজস্থানের খাওয়া গ্রামের কালুরাম নামের এক কৃষক সাপের কামড়ে তার পরিবারের তিনজন কে হারান । তার মা প্রেমবাই কে সাপের কামড় দিলে তাকে নিয়ে মন্দিরে যাওয়ার পথে সে মৃত্যুবরণ করে। তার বোনকে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড় দিলে তাকেও মন্দিরে নেওয়ার সময় সে মারা যায়। তার দাদি কানিদেভীও সাপের কামড়ে মারা যায় যখন বাসায় কেউ ছিল না [৩]। সাপের কামড় কে এখনো বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা অনেকাংশেই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অনেক কারণ রয়েছে। আমাদের প্রবন্ধের শুরুতে যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে তা মূলত হাসপাতালে পৌছানোর পরে যে রোগীরা মারা যায় তাদের তথ্যই মূলত নিবন্ধিত হয়। কিন্ত এর বাহিরে অসংখ্য রোগী থাকে যারা হাসপাতালে আসে না বা আসার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে। পর্যাপ্ত অর্থায়নের অভাবে এই পূর্ণাঙ্গ শুমারি করা সম্ভব হয় না। যে কারণে সাপের কামড় সংক্রান্ত প্রত্যেক পরিসংখ্যানে অপর্যাপ্ত এবং সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে। এমনকি সরকারও একে মানুষ মারা যাওয়ার এক অগ্রগন্য কারণ হিসেবে দেখছে না। এর ফলাফল হিসেবে গবেষকদের পক্ষে এ নিয়ে পুরোপুরি সঠিক গবেষণা করে এর সমাধানের জন্য কোন সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয় না সাপের কামড়ে আক্রন্ত হওয়ার বড় একটা অংশ হল ভারতের সবথেকে গরীব জনগন।তাই সাপ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার পর এরা মেডিকেল ট্রিটমেন্ট নেওয়া থেকে ওঝাদের নিকট গমন করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এছাড়া জনসাধারণের বড় এক অংশের সচেতনতার অভাব যা সাপের কামড় থেকে তাকে বাচাতে পারত তা করতে হেয়ালি করাটাও এক কারন। যেমনঃ রাতে চলাফেরার সময় টর্চের ব্যবহার, মেঝেতে না ঘুমানো, ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার না করা ইত্যাদি কিছু সহজ কিছু উপায় আছে যা সাপের কামড়ের মৃত্যুর হার কে কমাতে পারে। কিন্ত ভারতের অনেকের নিকটেই এটা করার থেকে বলা সহজ [৪]।

পাবলিক হেলথ সেন্টারগুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থা ফ্রি হলেও বেশিরভাগ সময় দেখা যায় এই সেন্টারগুলোতে কোন অ্যান্টিভেনমের ব্যবস্থা থাকে না [৫]।

এবার ভারতের অ্যান্টিভেনম প্রসঙ্গ নিয়ে ডিটেইলস কথা বলা উচিত। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেননা শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং বাংলাদেশে মূলত ভারতের  অ্যান্টিভেনমই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যে ভারত নিজে অ্যান্টিভেনমের সাপ্লাই তার প্রতিবেশী দেশ সমূহে দিয়ে থাকে তাহলে সেই ভারতেরই বা  এরকম অবস্থা কেন । ভারতের অ্যান্টিভেনমের কার্যক্ষমতা দিন দিন কমে আসছে। এই বিষয়টা ভারতের বিখ্যাত সরীসৃপবিদ (herpetrologist) রমালাস হুইটেকার ২০১৫ সালের এক প্রবন্ধে এভাবে তুলে ধরেন,

 “ভারতের বর্তমান সময়ের অ্যান্টিভেনমের কার্যকারিতা খুবই নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে ।এমনকি তা  ১৯৫০ সালের অ্যান্টিভেনমের তুলনাতেও অনেক নিচে অবস্থান করছে। কোবরার ১৯৫০ সালের অ্যান্টিভেনম বর্তমান অ্যান্টিভেনমের তুলনায় ছয়গুণ বেশি কার্যকর ছিল।  বর্তমান সময়ের অ্যান্টিভেনমের কার্যকারিতা খুবই নিচে চলে এসেছে আর এই দুঃখজনক পরিস্থিতি দূর করার জন্য অবশ্যই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। উদাহরণ দিচ্ছি, ছয় মিলিগ্রাম কোবরার বিষ নিউট্রালাইজ  করার জন্য প্রয়োজন দশ মিলি লিটার অ্যান্টি ভেনমের ভায়াল। এক গবেষণায় দেখা যায় যে, কোবরা এক কামড়ে ৭৪২ মিলিগ্রাম ভেনম প্রবেশ করতে পারে। দশ মিলি লিটার অ্যান্টিভেনমের ভায়ালের দাম পাঁচশত রুপি। এটা ঠিক ভারতে সবচেয়ে সস্তায় অ্যান্টিভেনম বিক্রি হয়। কিন্ত যদি আমরা দেখি, উপরের কোবরার বিষের পরিমাণ হিসেব করে অ্যান্টিভেনমের পরিমাণ নির্ণয় করি তাহলে তা দাঁড়ায় ১৬৫ ভাইল। এবং তার মূল্য দাঁড়ায় ৮২,৫০০ রুপি ! একজন কৃষক বা শ্রমিক পর্যায়ের লোকের জন্য নিঃসন্দেহে এই খরচ বহন করা অসাধ্য এক ব্যাপার। এ হিসেবেই সহজে প্রমাণ করে কেন পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বেশি মানুষ ভারতে সাপের কামড়ে মারা যায়। এ কারণেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ জনগন সাপের কামড়ের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে বিভিন্ন ভেষজ পথ্য, পাথরের চিকিৎসা, ইত্যাদি টুক টাক চিকিৎসা গ্রহণ করে। কিন্ত সত্যিকার বিষধর সাপের কামড়ে কখনোই এটাইপের পথ্য কোন কাজ দিবে না। এগুলো যদি কাজও করে তাহল বিষধর নয় এরকম সাপ যদি কামড় দেয় তখন অথবা শুষ্ক কামড়ে যে কামড়ে সাপ বিষ প্রবেশ করাতে পারে না। অর্থাৎ এগুলো আরো বিভ্রম সৃষ্টি করে”।

এছাড়াও হুইটেকার আরো বলেন,

“ ভারতে যেহেতু বেশ কয়েক প্রকার কোবরা এবং ক্রেইটের প্রজাতি রয়েছে তাই তাদের সবার অ্যান্টিভেনমের মিশ্রন তৈরি করা হয় যাতে করে আমরা সব বিষধর সাপকেই এক অ্যান্টিভেনমের দ্বারা কভার করতে পারি । কিন্ত সাপের অঞ্চলভিত্তিক বিষের উপাদানে তারতম্য থাকে। অর্থাৎ সাপ এক হলেও অঞ্চলভিত্তিকভাবে সাপের বিষের উপাদানের মধ্যে বিভিন্নতা রয়েছে। তাই আমাদের ভৌগোলিক ভিন্নতার কারণে একই অ্যান্টিভেনম দিয়ে সব কভার করাটা এক সমস্যা বৈকি। এজন্য ডাক্তাররা দেখা যায় একশত ভাইল অ্যান্টিভেনম প্রদান করছে যেখানে দশ বা বিশ ভাইলই যথেষ্ট হওয়ার কথা। এছাড়াও সাপ ধরে যারা অ্যান্টিভেনম তৈরির জন্য বিষ সংগ্রহ করছে তারা মূলত তামিল নাড়ুর ‘ইরুলা’ আদিবাসী। তারা সাপ থেকে বিষ সংগ্রহ করেই জীবনধারণ করে। কিন্ত এরা বিষ সংগ্রহ করে মূলত তামিল নাড়ুর দুই জেলা থেকেই যেখানে তারা বসবাস করে। কিন্ত অ্যান্টিভেনম কার্যকর প্রমাণ করতে হলে আমাদের সাপের বিষ সংগ্রহ করা দরকার ভারতের চারোকোণা হতে”।

রমালাস এবার বলেন,

 “ ভারতে আরো সাপ আছে যারা ভয়ানক বিষধর এবং যাদের কামড় মৃত্যুর কারণ হতে পারে। যেমনঃ তেইশ প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ, কিং কোবরা (শঙ্খচূড় বা রাজ গোখরা), প্রায় বিশ প্রজাতির পিট ভাইপার । এদের একটির জন্যও কোন অ্যান্টিভেনম ভারতে নেই। ভাগ্যক্রমে কিং কোবরা এবং সামুদ্রিক সাপের কামড়ের ঘটনা খুবই বিরল কিন্ত পিট ভাইপারের কামড় দেওয়ার ঘটনা চা চাষ হয় এরকম রাজ্যগুলোতে বেশি ঘটতে দেখা যায়। এগুলোর কামড়ের প্রভাব মধ্যম পর্যায়ের হিসেবে দেখা যায়। এক ছোট পিট ভাইপার নাম হাম্প নোজড পিট ভাইপার যা ওয়েস্টার্ন ঘাটের দক্ষিণাঞ্চলে খুব কমন এর কামড়ে শ্রীলঙ্কায় অনেক লোকই মারা যায়। মজার ব্যাপার হল , উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং আন্দামান এবং নিকোবরের দ্বীপে কোন কমন ক্রেইট (কেউটে বা কালাচ) , রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) এবং স্ স্কেলড ভাইপার সাপ নেই। কিন্ত ওখানকার বিষাক্ত সাপের জন্য কোন অ্যান্টিভেনম ওখানে নেই [৬]”। 

এ বিষয়টা আমি আরেকটু সহজ করে তুলে ধরছি। ভারতে সাপের কামড়ের জন্য যে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করা হয় তা মূলত ‘পলিভ্যালেন্ট’ টাইপ। ভারতে সব থেকে যে চার সাপের কামড়ে বেশি মৃত্যু ঘটে সেই চার সাপকে সামনে রেখে এই পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। সেই চার বিষাক্ত সাপকে একত্র ‘বিগ ফোর’ বলা হয়। চার সাপ হল যথাক্রমে কমন কোবরা (খৈয়া গোখরা), স স্কেলড ভাইপার, কম্ন ক্রেইট (কালাচ), এবং রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া)। এই চার সাপের অ্যান্টিভেনমই মূলত সাপের কামড়ে প্রয়োগ করা হয়। অর্থাৎ বিষধর যে কোন সাপের কামড়ের জন্য হাসপাতালে কাউকে নেওয়া হলে তাকে একমাত্র এই অ্যান্টিভেনমই প্রয়োগ করা হয়। এর বাহিরেও ভারতে অসংখ্য বিষধর সাপের প্রজাতি রয়েছে যাদের অনেকেরেই আবাস রয়েছে পুরো ভারত জুড়ে। ভারতের ২৭০ থেকে ৩০০ প্রজাতির সাপের মধ্যে ষাট প্রজাতির সাপই বিষধর। মনোক্লড কোবরা প্রায় পুরো ভারত জুড়েই রয়েছে কিন্ত এর অ্যান্টিভেনম ভারতে নেই। এবং তা তৈরি করাও হয় নি। এছাড়াও কমন ক্রেইটের পাশাপাশি আরো বিষাক্ত সাত প্রকার ক্রেইট ভারতে রয়েছে কিন্ত সেগুলোর জন্যও কোন কার্যকরি অ্যান্টিভেনম নেই । এমনকি স স্কেলড ভাইপার সাপের এক উপ প্রজাতি নাম শশার্ক স স্কেলড ভাইপার (Sochurek’s saw-scaled viper) যা পশ্চিম ভারত, উত্তর ভারত , পাকিস্তান , ইরানের অনেক জায়গাতেই পাওয়া যায় সেই সাপের কামড়েও এই অ্যান্টিভেনম কার্যকর নয় [৭]। অরুনাচল প্রদেশের মানুষদের সবথেকে বেশি ভয়ের কারণ হল কলব্যাক পিট ভাইপার ( Kaulback’s pit viper)স্থানীয় ভাষায় তারা এই সাপকে ‘বার্তা’ বলে ডাকে। এর কোন অ্যান্টিভেনম নেই [৮]। এই পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনমের ব্যাপারেও প্রশ্ন রয়েছে তা হল, গবেষক এবং বিজ্ঞানীদের মতে এবং এটা প্রমাণিত সত্য যে সাপের বিষ মূলত কিছু রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণ। এই মিশ্রণের অনেক কিছুই নির্ভর করে সাপের ডায়েটের উপর অর্থাৎ সাপ কি খায় তার উপর। অর্থাৎ অঞ্চলভেদেও একই সাপের বিষের তারতম্য রয়েছে। অর্থাৎ ভারতের এক অঞ্চলের কমন ক্রেইটের বিষ অন্য অঞ্চলের কমন ক্রেইটের বিষের মধ্যে অবশ্যই কিছু না কিছু তারতম্য থাকবে। অন্যান্য সাপের জন্যও একই কথা। ভারতের এই পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনমের জন্য যেখানকার সাপ থেকে বিষ সংগ্রহ করা হয় তা হল তামিল নাড়ু থেকে। কেননা এই তামিল নাড়ুতে রয়েছে সাপ ধরা এক উপজাতির অবস্থান যারা আদিকাল হতেই এ পেশায় নিযুক্ত এবং তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। এরা ‘ইরুলা’ উপজাতি হিসেবে পরিচিত। এদের আবাস যেহেতু তামিল নাড়ুতে তাই তারা মূলত তামিল নাড়ূর সাপ থেকেই বিষ সংগ্রহ করে। কিন্ত তামিল নাড়ুর বিষাক্ত সাপের খাদ্যভ্যাসের সাথে অন্য অঞ্চলের সাপের খাদ্যাভ্যাসের মিল নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিষের ধরণেও তারতম্য আসবে। আর এক্ষেত্রে অ্যান্টিভেনম কার্যকর নাও হতে পারে।

এছাড়াও বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এই পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম কিছু নির্দিষ্ট বিষের উপাদানের বেলায় কার্যকর নয়। তেযপুর (Tezpur) ইউনিভার্সিটির আশীস কে মুখার্জী (Ashis K. Mukherjee) এবং তার দল ২০১৭ সালে বের করেন যে , পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম স স্কেলড ভাইপারের নির্দিষ্ট কিছু বিষ কে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম নয়। মোদ্দাকথা , যে ঘোড়া থেকে এর অ্যান্টিভেনম নেওয়া হয়েছে সেই ঘোড়াতেও এই সাপের ঐ নির্দিষ্ট বিষের ইমিউনু গঠন হতে পারেনি। এই নির্দিষ্ট বিষের উপাদানগুলো হল, ফসফলিফেস এ টু (phospholiphase A2),মেটালোপ্রোটিনাইজেস (metalloproteinases), এবং হায়ালুরোনাইডেস (hyaluronidase) । এরা টিস্যুকে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে যে রোগী তার চলাচলের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই গবেষকদের মতে ভারতের পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম নিয়ে আবারো ভাবা উচিত। একে পুনরায় সাজানো উচিত। এই বর্তমান বিগ ফোরের সাথে অন্যান্য সাপকে কিভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা নিয়ে ভাবা উচিত। আর নয়তো নির্দিষ্ট সাপের জন্য নির্দিষ্ট বিষ সে পদ্ধতিতেও এগোনো যায়। যে পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়াতে সাপের কামড়ে চিকিৎসা করা হয়। কিন্ত এর পিছনে মূল যে সমস্যা তা হল এটা এক অবমূল্যায়ন খাত। ভারতের মত বড় দেশের জন্য এই বিষয়ে গবেষণার জন্য যে পরিমাণ অর্থায়ন দরকার তার স্বল্পতা এবং সরকার কতৃক হেয়ালিপনা অনেকাংশেই দায়ী। ক্যান্সার , টিউবারক্লোসিস এবং এইডসের মত প্রাণঘাতি বিষয়সমূহ যেভাবে মানুষের নজরে এসেছে ঠিক তদ্রুপ এ দিকটাও নজরে আসা উচিত [৯] ।  

 

আমাদের এ বিষয়ে আগের আর্টিকেল ‘ অস্ট্রেলিয়াতে সাপে কাটা রোগী এত কম কেন ? ‘

 

তথ্যের উৎসঃ  

[১] https://www.who.int/snakebites/epidemiology/en/#:~:text=In%20India%20alone%2C%20it%20has,die%20from%20snakebite%20every%20year.

[২] https://journals.plos.org/plosntds/article?id=10.1371/journal.pntd.0001018

[৩] https://www.theguardian.com/global-development/2017/oct/27/venom-myth-and-medicine-india-fights-its-reputation-as-the-worlds-snakebite-capital

[৪] https://www.thehindu.com/sci-tech/energy-and-environment/feeling-rattled/article28406965.ece

[৫] https://thewire.in/health/269144

[৬] http://www.neurologyindia.com/article.asp?issn=0028-3886;year=2015;volume=63;issue=3;spage=300;epage=303;aulast=Whitaker

[৭] https://theprint.in/science/why-thousands-of-indians-continue-to-die-of-snakebites/188407/

[৮] https://qz.com/india/465409/snake-bites-kill-45000-indians-every-year-and-that-number-wont-come-down-anytime-soon/

[৯] https://thewire.in/health/269144

 

 

One thought on “ভারতে সাপের কামড়ে এত বেশি মানুষ মারা যাওয়ার কারণ কি?

  1. সাপুড়ে নজরুলের মৃত্যুর দায় কে নিবে? | WILDLIFE THINKER

    […] vhttps://www.wildlifethinker.com/2020/06/23/%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e… […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.